যৌতুক মামলায়ে দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলে খসড়া আজকে শেয়ার করা হল। যৌতুক মামলায় যদি আসামীর বিরুদ্ধে রায় হয় তাহলে কিভাবে আপিল করে তাকে জামিনে করবেন জেনে নিন।
মোকাম জেলা ও দায়রা জজ আদালত, নাটোর
ফৌঃ আপীল নং: /২৫
সূত্র- সিংড়া আমলী আদালতের মামলা নং- ২০/২০১৩ (সিংড়া)
ধারা- ২০১৮ সালের যৌতুক নিঃ আঃ ৩ ধারা যাহা গত ইং ০৮/০১/২৫ তারিখে সিনিঃ জুডিঃ ম্যাজিঃ জনাব মোঃ সুমন আলি মহোদয়ের আদালতে নিষ্পত্তিকৃত
আপিলকারী মোছাঃ আঁখি আক্তার পিতা- মোঃ আলাউদ্দিন থানা- আত্রাই জেলা- নওগাঁ | বনাম | রেসপন্ডেন্ট ১। মোঃ ছামিউল আলম পিতা- জিল্লুর রহমান বাদল সাং- করচমাড়িয়া থানা- সিংড়া জেলা- নাটোর |
মাননীয় আদালতে আপিলকারী পক্ষে বিজ্ঞ নিম্ন আদালতের গত ইং ০৮/০১/২৫ তারিখের রায় ও আদেশ রদ রহিতের প্রার্থনা।
সম্মান পূর্বক আপিলকারী নিবেদন করেন যে, আসামীদ্বয় যৌতুক লোভী অসৎ প্রকৃতির লোক। ১নং আসামী আঁখি আক্তার আমার স্ত্রী এবং ২নং আসামী আমার শ্বশুর হয়। ১নং কার আসামীর সহিত আমার গত ০৭/০৫/২২ইং তারিখে ইসলামী শরা-শরিয়ত অনুযায়ী পারিবারিক, সামাজিক ও আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবাহ সুসম্পন্ন হয় এবং পরবর্তীতে আমাদের বিবাহ রেজিষ্ট্রি হয়। আমি আমার পিতা-মাতার একমাত্র পুত্র সন্তান। বিবাহের সময় আমার স্ত্রী ১নং আসামীকে আমি ১ ভরি স্বর্ণের গহনা প্রদান করি। বিবাহের পর আমার পিতা-মাতা সহ একান্নবর্তী পরিবারে ঘর-সংসার করাকালে ১নং আসামী বিবাহের পর হইতে আমার বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে সহ্য করিতে পারে না। তারই ধারাবাহিকতায় ১নং আসামী স্বেচ্ছাচার ভাবে যেভাবে খুশি, সেভাবে চলে। আমি মানা-নিষেধ করিলে ১নং আসামী আমাকে আমার পিতা মাতা হইতে পৃথক গীবাড়িতে পৃথক অন্নে বসবাসের জন্য বিভিন্ন সময় আমাকে চাপ প্রয়োগ করিয়া আসিতেছে। সম্প্রতি ১নং আসামী আমার নিকট হইতে যৌতুক হিসাবে ২নং আসামীর বাড়ির পার্শ্বে বাড়ী করার মত ০৫ শতাংশ সম্পত্তি তাহার নামে বিক্রি কবলা লিখিয়া দিয়া সেখানে বাড়ি ঘর নির্মাণ করিধ্বনিয়র করার জন্য বলে। আমি এহেন ভাবে ১নং আসামীকে যৌতুক প্রদানে অক্ষমতার কথা জানাইলে বিভিন্ন ভাবে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করিতে থাকে।
এমতাবস্থায় ঘটনার দিন গত ০১/০১/২০২৩ইং মোতাবেক বাংলা ১৭ই পৌষ ১৪২৯ সন রোজ রবিবার সকাল অনুমান ৭.০০ ঘটিকার সময় ২নং আসামী আমার শ্বশুরের সহিত ১নং আসামী মোবাইলে শলা-পরামর্শ করিয়া পরস্পর যোগসাজসে ১নং আসামী আমার নিকট হইতে যৌতুক হিসাবে ২নং আসামীর বাড়ির পার্শ্বে বাড়ি করার মত ০৫ শতাংশ সম্পত্তি তাহার নামে ছাফ কবলা দলিল করিয়া দিতে হইবে জানায়। অন্যথায় ১নং আসামী আমার সহিত আমার বাড়িতে ঘর-সংসার করিবে না। আমি যৌতুক হিসাবে ১নং আসামীকে উক্তরূপ সম্পত্তি লিখিয়া দিবার ও তথায় বাড়ি করিয়া দিতে অপারগতার কথা বলিলে ২নং আসামীর মোবাইলের মাধ্যমে শলা-পরামর্শ ও সহযোগিতায় ১নং আসামী আমার দেও সোনার গহনা, টাকা পয়সা ও কাপড় চোপড় লইয়া ১নং আসামী তার পিতার বাড়িতে চলিয়া যায়। বর্তমানে ১নং আসামী তার ইচ্ছামত স্বেচ্ছাচারী জীবন যাপন করিতেছে। ঘটনার সাক্ষী আছে, বিচার চাই। উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বেও এই ১নং আসামী এহেন কাজ করিয়া আমার বাড়ি হইতে চলিয়া গেলে বিভিন্ন শালিস-দরবার করিয়া তাহাকে বুঝাইয়া আমার বাড়িতে আনা হইয়াছিল।
উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আমলী আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য চেয়ারম্যান ১১ নং ছাতারদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ সিংড়া, নাটোর বরাবর প্রেরিত হয়। তদন্ত অন্তে প্রতিবেদনের আলোকে আসামী মোছাঃ আঁখি আক্তার এর বিরুদ্ধে মামলাটির প্রাথমিক সত্যতা প্রতিয়মান হওয়ায় নালিশি দরখাস্তে বর্নিত আসামী মোছাঃ আঁখি আক্তারের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮ এর ৩ ধারায় অপরাধ আমলে গ্রহন করা হয়। অতঃপর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হইলে নিষ্পত্তির জন্য মামলাটি আমলী আদালত হইতে বিচারিক আদালতে বদলি করা হয়। বিচারিক আদাল্লত পরবর্তিতে ১০/০৯/২০২৮ তারিখে The Code of Criminal Procedure, 1898 এর ২৪২ ধারা মতে আসামী মোছাঃ আঁখি আক্তার (১৯) এর বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর ৩ ধারায় উল্লিখিত অপরাধের অভিযোগ গঠন করেন। আসামী পলাতক থাকায় গঠিত অভিযোগ তাকে পাঠ করে শোনানো ও ব্যাখ্যা করে বোঝানো সম্ভব হয় নি। মামলা প্রমাণের জন্য নালিশকারীপক্ষে মোট ০৪ (চার) জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। নালিশকারীপক্ষের সাক্ষীগণের সাক্ষ্য প্রদান সমাপ্ত হলে উক্ত আসামী মোছাঃ আঁখি আক্তার পালতক থাকায় তাকে গত ২৩/১২/২০২৪ খ্রি. তারিখে The Code of Criminal Procedure, 1898 এর ৩৪২ ধারার বিধান মোতাবেক তাকে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। আসামীপক্ষে সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন কিংবা কোনো কাগজাদি দাখিল না করায় এবং নালিশকারীপক্ষে পরীক্ষিত সাক্ষীগণকে আসামীপক্ষে জেরা না করায় আসামীপক্ষের কোনোরুপ ডিফেন্স স্টোরি বর্ণিত হয়নি। অতঃপর অদ্য যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায়ের জন্য নেওয়া হয়। রায়ে উক্ত আসামীকে ০১ (এক) বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ১,০০০/- (এক হাজার) টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ০১ (এক) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। উক্ত রায়ে আসামী দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হইয়া নিম্ন হেতুবাদে অত্র আপিল মোকদ্দমা আনায়ন করিতে বাধ্য হইল।
বিধায় প্রার্থনা আপিলকারী মাননীয় আদালতে প্রার্থনা করেন যে, বিজ্ঞ নিম্ন আদালত গত ইং ০৮/০১/২৫ তারিখে দন্ডাদেশ রদরহিত করিয়া আপিল মঞ্জুরের যথাযথ আদেশ দানে মর্জি হয়। ইতি তাং- ১৫/০৫/২৫ ইং।
হেতুবাদ সমূহ
১। বিজ্ঞ নিম্ন আদালত স্বাক্ষীদের বর্ননাক্রম যথাক্রমে অনুধাবনে ব্যার্থ হইয়া যে রায় প্রদান করিয়াছেন উহাদের বিচার রদরহিত যোগ্য বিবেচনায় আপিল মঞ্জুরের যথাযথ আদেশ দানে মর্জি হয়।
২।
৩।
৪।
অন্যান্য হেতুবাদ সমূহ চূড়ান্ত শুনানীকালে মাননীয় আদালতের অনুমতিক্রমে উপস্থাপিত করা হইবে।