২০২৫ সালে জমির নামজারি বা খারিজ বা মিউটেশন করতে কি কি কাগজ প্রয়োজন?

-

নামজারি বা জমি খারিজ করতে কি কি কাগজপত্র লাগে সেটি সম্পর্কে আলোচনা করব। তৌহিদ সাহেব গতবছর একটি জমি ক্রয় করে। জমির কাগজপত্র সব কিছুই ঠিক আছে। কিন্তু একদিন অনলাইন ঘাটতে যেয়ে দেখল তার সম্পত্তির যে দাগ নাম্বার সেই দাগে অন্য কারো নাম আছে। তখন তিনি এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলেন। 

যখন কোন সম্পত্তির ক্রয়ের পরে মিউটেশন বা নাম জারি না করা হয় তখন পূর্বের যিনি মালিক থাকেন তার নামেই রেকর্ড লিপিবদ্ধ থাকে। এই রেকর্ড থেকে তার নাম বাদ দিয়ে পরের যিনি মালিক তার নাম পত্তন করাকেই নামজারি খারিজ অথবা মিউটেশন বলে। নামজারি বা খারিজ হচ্ছে মূলত রেকর্ড হালনাগাদকরন বা সংশোধনকরন প্রক্রিয়া।

বর্তমান সময়ের নামজারী খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া তবে অনেকেই না জানার কারণে এটিকে অনেক জটিল মনে করেন। 

নিমাত্মক কাগজসমূহ থাকলে আপনি নিজেই ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে নাম ধরে আবেদন করতে পারবেন। 

১। মূল দলিল সমূহ যেমন: সাফ-কবলা, হেবা, হেবাবিল এওয়াজ, বণ্টননামা, দানপত্র প্রভৃতি রেজিস্ট্রিকৃত মূল দলিল।

২।  ভায়া দলিল সমূহ: জমির মূল দলিল বা পূর্ববর্তী দলিল কে ভায়া বা বায়া দলিল বলে। আপনি যার নিকট হতে জমি ক্রয় করেছেন তার দলিলটি লাগবে। আবার সে লোক যদি অন্য কারো কাছে ক্রয় করে তবে সেই বায়া দলিলটিও দিতে হবে। অর্থাৎ জমির ধারাবাহিক হস্থান্তর মিল করার জন্য ভায়া দলিল প্রয়োজন হয়ে থাকে।

৩। খতিয়ানঃ হাল বা সর্বশেষ জরিপের (বি.আর.এস, আর.এস, বি.এস ইত্যাদি) খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির ফটোকপি প্রয়োজন।

৪। খারিজ খতিয়ানঃ হাল জরিপের খতিয়ান থেকে দলিলমূলে খারিজ করলে সেই খারিজ খতিয়ানের ফটোকপি প্রয়োজন হবে। তবে নতুন ই-নামজারি সিস্টেমে খারিজ খতিয়ানটি থাকলে নামজারি আবেদনের সময় স্বয়ংক্রিয় ভাবেই যাচাই হয়ে যাবে।

৫। খাজনা পরিশোধের রশিদ বা দাখিলাঃ নামজারির জন্য খারিজ খতিয়ান হলে দাখিলাও আবশ্যক। জমি হস্তান্তর করতে চাইলে মালিকের এটি প্রয়োজন হবে। স্মার্ট ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেমের মাধ্যমে খাজনা প্রদান করা হলে নামজারি আবেদনে স্বয়ংক্রিয় ভাবে হোল্ডিং নম্বর যাচাই হয়ে যাবে।

৬। ওয়ারিশন সনদঃ যদি উত্তরাধিকারের সম্পত্তি ক্রয় করা হয় তবে উত্তরাধিকার সনদ লাগবে। এক্ষেত্রে সনদটি ইউ/পি চেয়ারম্যান বা পৌরসভা/সিটিকর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত সনদ হতে হবে। এখানে মনে রাখতে হবে, সর্বশেষ বা হাল জরিপের মূল রেকর্ডীয় মালিক থেকে জমি ক্রয় করলে উত্তরাধিকার সনদ প্রয়োজন হবে না।

৭। ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্রঃ একক বা যৌথ মালিক হলে প্রত্যেকের ও আবেদনকারী প্রতিনিধি হলে প্রতিনিধির ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি প্রয়োজন হবে। বর্তমানে অনলাইন নামজারিতে এটি আবশ্যক।

৮। ফটো: নামজারিতে ছবি আবশ্যক। ছবি না দিলে সহকারি কমিশনার (ভূমি) নামজারি বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন। তাই প্রত্যেক দলিল গ্রহীতা ও আবেদনকারী প্রতিনিধি হলে প্রতিনিধির পাসপোর্ট সাইজের এক কপি রঙ্গিন ছবি আবেদনের সময় আপলোড করতে হবে।

৯। ফোন নম্বরঃ আবেদনকারীকে অবশ্যই সচল ফোন নম্বর প্রদান করতে হবে। নামজারির অবস্থা বা অনলাইনে OTP (অন টাইম পাসওয়ার্ড) প্রদানের জন্য ফোন নম্বর প্রয়োজন হবে। মোবাইলে SMS এর মাধ্যমে নামজারির হালনাগাদ তথ্য জানানো হয়। তাই গ্রহিতা বা গ্রহিতা কর্তৃক নিযুক্ত প্রতিনিধির সচল মোবাইল নম্বর আবশ্যক। এটি ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক একাধিকবার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে।

স্মার্ট সেবা পোর্টাল ব্যবহারে জনসচেতনতা অবলম্বন জরুরী। তাই শেয়ার করে নিজের টাইমলাইনে রাখার পাশাপাশি অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিন। ধন্যবাদ।

LawyerClue
LawyerCluehttps://lawyerclue.com
  LawyerClue offers expert legal insights, tips, and resources to help individuals and businesses navigate the complexities of the law.

Share this article

সাম্প্রতিক

জনপ্রিয় ক্যাটাগরি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Recent comments