লিগ্যাল নোটিশ বা উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশ-
কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সাধারণত কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে কোনো নোটিশ পাঠানো হলে সেই নোটিশকে লিগ্যাল নোটিশ বা উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশ বলা হয়। উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশ মানেই কিন্তু মামলা নয়। উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশকে মামলা বলা না গেলেও মামলা-মোকদ্দমার পূর্বপ্রস্তুতি বলা যেতে পারে। একজন আইনজীবীর বা এডভোকেটের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের বা অভিযুক্তের কাছে তার অভিযোগ তুলে ধরা হয় উকিল নোটিশের মাধ্যমে। এ নোটিশ বিভিন্ন ধরনের মোকদ্দমার বিষয় নিয়ে হতে পারে। পারিবারিক, জমিজমা থেকে শুরু করে আর্থিক লেনদেন বিষয়ে যেকোনো আইনি বিরোধ থাকলেই উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো যায়।
এ নোটিশে সাধারণত আইনজীবীর মাধ্যমে বাদীর দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়। নোটিশে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় এবং অনুরোধ করা হয় এ সময়সীমার মধ্যে বিরোধীয় বিষয়ে সমাধান করতে। না হলে কোন আইনে কীভাবে মামলা-মোকদ্দমা করবে, সে বিষয়ে সতর্ক করেও দেওয়া হয়। কিছু মামলার ক্ষেত্রে উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশ আছে, যা মামলা করার আগে দেওয়া বাধ্যতামূলক। যেমন চেক ডিজঅনার-সংক্রান্ত মামলায় বা চেকের মামলায় উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশ অবশ্যই দিতে হয় প্রতিপক্ষকে।
উকিল নোটিশ পেলে কি করবেন?
লিগ্যাল নোটিশ পেলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। প্রথমেই আইনি নোটিশ পেলে দেখতে হবে এর বিষয়বস্তু কতটা যুক্তিসংগত এবং আসলেই এর কোনো ভিত্তি আছে কি না। প্রথমেই নোটিশে উল্লেখিত দাবির সত্যতা যাচাই করে দেখতে হবে। যদি কোনো ধরনের ভিত্তি না থাকে কিংবা শুধুমাত্র হয়রানি করার জন্য কেউ আইনজীবীর মাধ্যমে নোটিশ পাঠান, তাহলে এর জবাব দিয়ে যুক্তি খণ্ডাতে হবে এবং প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে হবে। এবং এই জবাব একজন আইনজীবীর মাধ্যমে দেয়াই উত্তম কারন তিনি আইনগত জটিলতা সম্পর্কে ভাল জানেন। একটি বিষয় জেনে রাখা খুব জরুরি যে আইনি নোটিশ পেয়ে কোনো আইনজীবীকে দোষ দিলে হবে না। কারণ একজন আইনজীবী তার মোয়াক্কেলের নিকট থেকে নির্দেশনা পেয়েই আইনি নোটিশ পাঠান।
সত্য-মিথ্যা যাচাই করে একজন আইনজীবীর পক্ষে নোটিশ দেওয়ার সুযোগ কম বা নেই বললেই চলে। তাই কোনো হয়রানিমূলক নোটিশ পেলে তার জবাব দিয়ে এর স্পষ্ট কারণ তুলে ধরা উত্তম। নোটিশের জবাব একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমেই দেওয়া উচিত। যদি নোটিশে উল্লিখিত অভিযোগের সত্যতা থেকে থাকে, তাহলে এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে নিতে পারেন। নোটিশটি যদি পারিবারিক বিষয় হয়, তাহলে আলোচনা করে পারিবারিক ভাবে মিটিয়ে ফেলা উতি।
অনেকেই উকিল নোটিশ বা লিগ্যাল নোটিশ পেলে ডাকপিয়নের কাছ থেকে রিসিভ করতে চান না। এতে মাঝেমধ্যে উল্টো ফলও ঘটতে পারে। কারণ নোটিশ আপনি গ্রহণ করেন আর নাই করেন, আইনের ব্যাখ্যায় নোটিশটি ঠিকঠাক প্রেরণ করা হয়েছিল তা অনেক সময় প্রমাণ করা যায়। নোটিশ গ্রহণ না করলে প্রকৃত দাবি বা অভিযোগ সম্পর্কে জানাও যায় না এবং মামলায় যাওয়ার আগে নিষ্পত্তির সুযোগও কমে যায়।